ফেসবুকে জনপ্রিয় হওয়ার ০৫টি উপায়

 

এ এফ এম তানভীর নবী

ফেসবুকে জনপ্রিয়তার অর্থ আপনার পেজ ভিউ এবং লাইক ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়া এবং আপনার  আয়ের পথ ত্বরান্বিত হওয়া। আপনার কোম্পানি ব্রান্ড বা প্রোডাক্ট ব্রান্ড ব্যাবহারকারীদের নিকট সমাদৃত হওয়ার গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক হল ফেসবুকে জনপ্রিয়তা। ফেসবুকের প্রধান নিয়ামক হল ব্যবহারকারীর আধিক্য। আপনার মূল্যবান সময়ের সঠিক সদ্ব্যবহার হল বিভিন্ন কৌশলের প্রয়োগে সময় ক্ষেপন করা। ফেসবুকের বিভিন্ন ফিচারের কাযকারিতা সর্ম্পকে সুস্পষ্ঠ ধারনা রাখা আপনার জন্য জরুরী। আপনার একটি বিষয় অবগত হতে হবে যে বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ফেসবুকে জনপ্রিয় হয়ে আর্থিক সাফল্য লাভের পথটি খুবই প্রতিযোগিতামুখর। অর্জনের ইচ্ছাই এখানে যথেষ্ট নয়, মেধা, শ্রম, সময় ও সঠিক কৌশলের প্রচেষ্টা আপনার লক্ষ্যে অর্জনে সহায়ক হতে পারে। সুখের বিষয় হল ভাগ্য সাহসীদের অনুগ্রহ করে। ফেসবুকে জনপ্রিয় হওয়ার একাধিক উপায় আছে।



ফেসবুক পরিচালনায় যে বিষয়গুলো আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে:

  • আপনার প্রোডাক্টের ব্রান্ড ভ্যালু বাড়ানো।

  • ব্যবহারকারীর আধিক্য এবং ক্রেতায় রুপান্তরের কৌশল রপ্ত করা।

  • ফেসবুক ফিচার সর্ম্পকে সুস্পষ্ঠ ধারনা রাখা।

  • ব্যবহারকারীদের পেজে এনগেজ রাখা ।

  • ফেসবুকের এলগরিদম সর্ম্পকে ধারনা রাখা ।

  • ব্যবহারকারীদের ফ্যান ফলোয়ারে আগ্রহী করা। 



বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ব্যবসার জন্য ফেসবুকের সাথে সর্ম্পক স্থাপন দরকার। রাজশাহীর কলেজ ছাত্র আকরামের গল্পটি দারুন। কো্ভিড-১৯ এর অখন্ড অবসরে অসহ্য হয়ে আয়ের ভাবনা করে। আমের মৌসুম, ফেসবুক পেজ খুলে আমের পসরা নিয়ে বসেন। টারগেট করে ফেসবুক অডি্য়েন্সে যুক্ত হন। ভাল সাড়া পান। কুষ্টিয়ার কুমার খালির মেয়ে মিনা রানীর বুটিক ব্যবসার সাফল্য অন্যদেরও অনুপ্রানিত এবং অনুরণিত  করে। ফেসবুক তাকেও বিমুখ করে নাই। মফস্বলের নারী উদ্যেক্তা মিনা রানী বুঝেছিলেন কিভাবে ফেসবুক এর ব্যবহারকারীকে ক্রেতায় রুপান্তর করা যায়। দুই উদাহরনের একটিই উদ্দেশ্য এবং তা হলো আপনিও পারবেন। এ ক্ষেত্রে থেমে না যায়ে আপনার প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখুন। আপনার ব্যবসায়িক সৃজনশীলতাকে চেতনায় রাখুন। ভাবুন এবং চারিদিকে চোখ রাখুন, ব্যতিক্রমী কোন কৌশলটির প্রয়োগে আপনি ব্যবসার বাজিমাত করতে পারেন।তবে সাবধান যেন অন্যায়, অসততা এবং অল্প সময়ে ধনী হওয়ার হঠকারী চিন্তা যেন আপনাকে গ্রাস না করে।

ফেসবুক জনপ্রিয়তার প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গের দিকে দৃষ্টিপাত করি:


(১)  প্রোডাক্ট বা ব্রান্ডের পরিচিতি শক্তিশালী করা:  
আ্যাড সর্বদা ক্রেতাকে ক্রয়ে প্রলুদ্ব্ধ করার জন্য উপস্থাপন করতে হবে, এটা ঠিক নয়। আ্যাডে ব্যবহার করা  ছবি কোম্পানী বা ব্রান্ডকে ফোকাস করাটাই গুরুত্বপূর্ণ। আউটডোরে ভ্রমনের একটি  ছবি বা বোনভজনের বিশেষ মুহূর্তের শট হতে পারে দারুন ব্রান্ডিং। ক্রেতার শব্দ চয়নে আপনার ব্রান্ডের নামটি উচ্চরণ, প্রচারণার ক্ষেত্রে হতে পারে মাইল ফলক। বড় বড় কোম্পানির ব্রান্ডিং করার পদ্ধতিটি সুক্ষ বিবেচনায় বিশ্লেষণ করুন।



(২)
একাধিক পণ্যের সমন্বয়ে ক্যারোজেল আ্যাডের ব্যবহার: আপনি জেনে খুশি হবেন ফেসবুক সর্বদাই তার ব্যবহারকারীর সুবিধার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ব্যবহারকারীদের মধ্যে আপনি একজন ব্যবসায়ী রয়েছেন, সহজে ক্রেতার পছন্দের নজরে থাকা পণ্যেটি দিয়ে যে ব্যবসা আপনি করছেন,  তার অংশীদারে কিন্তু ফেসবুকও । ক্যারোজেল আ্যাডের ব্যবহারের বিশেষত্ব হলো একধিক পণ্যের ক্রমিক প্রদর্শন। মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি স্ক্রলিং করা ও  পছন্দের ছবি উপভোগ করা।পণ্যের সাথে পারস্পরিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার ভাবধারায় পণ্যের সাথে ক্রেতার সংযোগ স্থাপিত হয়। ব্যাপারটি এক কথায় চমৎকার।


(৩) ইমেজের বা
ছবির চেয়ে ভিডিও, ব্যবহারকারীদের আকষর্ণ করে বেশি: স্থির ছবির চেয়ে ভিডিও কনটেন্ট এর   চাহিদা অধিক। ফেসবুক আ্যলগরিদম ভিডিও বান্ধব। সার্বিক বিবেচনায়  ভিডিও এর ব্যবহার আপনার পেজের জনপ্রিয়তাকে অনেক খানি এগিয়ে রাখবে। প্রশ্ন হলো ভিডিও কেন ক্রেতা আকর্ষনে বা ব্যবহারকারীদের মনোযোগে অগ্রন্য ভূমিকা পালন করে। গবেষনায় দেখা যায় ব্যবহারকারী ভিডিও কনটেন্টের উপাদান বিশ্লেষনে অধিক স্বাচ্ছন্দবোধ করে এবং
ভিডিও কনটেন্ট পণ্যে বা সার্ভিস সর্ম্পকে সঠিক সিদ্ধান্তে উপনীত হতে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখে। প্রোডাক্ট আকশন সহজেই বোধগম্য। ধরুন আপনি ফ্যাশন হাউজের ব্যবসায় জড়িত। আপনার সুযোগ আছে প্রসেস থেকে শুরু করে ফিনিসিং পর্যন্ত অল্প সময়ে প্রোডাক্টে সর্ম্পকে উপস্থাপনের। ব্যবহারকারীর নিকট যা  নিশ্চিত ভাবেই আই ক্যাচিং।


(৪) ডিসকাউন্ট অফার করা: জনপ্রিয় হওয়া বা ক্রেতা আকর্ষনের অন্যত্তম একটি মাধ্যম হলো ডিসকাউন্ট অফার করা। ক্রেতার সহজাত প্রবৃত্তি কম মূ্ল্যে ব্রান্ডের গুনগতমান সম্পন্ন পণ্যের ক্রয়। আ্যড ক্লিকের মাধ্যমে ক্রেতা পেতে পারে একটি কোড যেখানে আপনার পণ্যের ডিসকাউন্ট অফার
নিশ্চিত হবে। ক্রেতার জন্য এটা হবে সোশ্যাল প্রুফ। ব্রান্ডের কোম্পানীগুলো বিভিন্ন সময়ে ডিসকাউন্ট অফার করে এবং ক্রেতার মনোযোগ আকর্ষনের জন্য এটা একট দারুন কৌশল।


(৫)
পোস্ট বুস্টিং করা: পোস্ট বুস্টিং আপনার সার্ভিস বা পণ্যের জনপ্রিয়তা এবং গ্রহনযোগ্যতা বাড়িয়ে দিবে। এখানে অর্থ খরচের ব্যাপার রয়েছে।সংশয় পোষন না করে   পোস্ট বুস্টিং করুন, ভাল ফল পাবেন। যে নির্বাচিত  পোস্টগুলো পূর্ব হতেই ব্যবহারকারীর গ্রহনযোগ্যতা পেয়েছিল, সেগুলো বুস্টিং করলে নুতুনরা আকৃষ্ট হবে, দারুন ফল পাবেন।আপনার কনটেন্ট, ব্লগ ও পণ্যের সেল বাড়বে, ব্যয়িত অর্থে অর্থবান হবেন।

অযথা সময় ক্ষেপন না করে কর্মমুখী চিন্ত-চেতনা দ্বারা তাড়িত হউন।ফেসবুকে বিলিয়ন ব্যবহারকারী রয়েছে। বিভিন্নমুখী কনটেন্ট তৈরি করে তারা জনপ্রিয়, উচ্চ  মান সম্পন্ন কনটেন্টের কারনে বায়ারের অগ্রিম বায়না তাদের কপালেই জুটছে। আপনার দক্ষতাকে শানিত করুন ।  কর্মের প্রতি আবেগ, আপনাকে দক্ষ করে তুলবে।জোরালো কর্ম প্রচেষ্টাই সাফল্যের সোপান। মোটেই হতাশ হবেন না। ফেসবুকে জনপ্রিয় হওয়ার উপায়গুলো পড়ুন, জানুন এবং প্রয়োগ করুন।


Top Bangla Pages

My Work Sample-1

My Work Sample-2

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ফেসবুকে সেল বাড়ানোর সুনিদিষ্ট কার্যকর উপায়

ব্যবসা বৃদ্ধির জন্য ফেসবুক আপনাকে কি ভাবে সাহায্যে করতে পারে।